অ্যাস্ট্রেজেনেকার বিরুদ্ধে মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে ইউরোপিও ইউনিয়ন
টরন্টো, এপ্রিল ২২: ইউরোপের কাছে টিকা সরবরাহের ঘোষণা দেওয়ার পরও ব্রিটিশ-সুইডিশ টিকা কোম্পানি অ্যাস্ট্রেজেনেকা তা দিতে ব্যর্থ হওয়ায় এর বিরুদ্ধে মামলা করতে যাচ্ছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন, জানিয়েছে স্পুটনিক।
ইউরোপিয় কমিশন এ মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে কূটনৈতিক সূত্রের উদ্ধৃতি দিয়ে জানিয়েছে রয়টার্স। শীর্ষ এক কূটনীতিক জানিয়েছেন ব্রাসেলসে ইউরোপিয় কমিশন প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনার পর এ মামলার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
এসব টিকা অ্যাস্ট্রেজেনেকা দ্বিতীয় প্রান্তিকের মধ্যে ইউরোপে সরবরাহ করার অঙ্গীকার করেছিল।
বৈঠকে অধিকাংশ দেশ মামলার পক্ষে সমর্থন জানিয়ে প্রয়োজনীয় সহায়তা দেওয়ার কথা জানান।
বেলজিয়ামের একটি কারখানার সঙ্গে কারিগরী জটিলতা সহ বিভিন্ন সমস্যার কারণে অ্যাস্ট্রেজেনেকার পক্ষে ৩শ মিলিয়ন টিকা ইউরোপে দেওয়া সম্ভব হয়নি। চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে অঙ্গীকারের মাত্র ৪০ শতাংশ টিকা অ্যাস্ট্রেজেনেকার পক্ষে তৈরি সম্ভব হয়।
অ্যাস্ট্রেজেনেকার বিরুদ্ধে ইউরোপের অভিযোগ ওঠে কোম্পানিটি ব্রিটেনের প্লান্টে টিকা তৈরি করলেও তা স্থানীয় চাহিদাকে প্রাধান্য দেওয়ায় শেষপর্যন্ত ইউরোপে টিকা পাঠানো সম্ভব হয়নি।
ইউরোপের নাগরিকদের মধ্যে ২২.৯ শতাংশ মানুষ এক ডোজ কোভিড টিকা দিতে পেরেছেন। আগামী গ্রীষ্ম নাগাদ ৭০ শতাংশ ইউরোপের নাগরিক টিকা পেতে পারে বলে আশা করছেন ইইউ নেতারা।
অবশ্য কূটনৈতিক সূত্রে প্রকাশ, কমিশন কেন মামলা করতে যাচ্ছে, তার বিস্তারিত ইউরোপীয় সদস্য রাষ্ট্রগুলোকে খোলাসা করে জানানো হয়নি, সেটাই বৈঠকে বিতর্কের সূত্রপাত করেছে। একজন কূটনীতিক জানিয়েছেন, তা কেবলই সরবরাহ সংক্রান্ত এবং অপর এক কূটনীতিক জানিয়েছেন বিষয়টি আসলে চুক্তিমাফিক চলার ক্ষেত্রে মেনে চলার পদক্ষেপ।
এছাড়া চুক্তিমাফিক সরবরাহ নিশ্চিতের পাশাপাশি তা রাজনৈতিকও বটে। আর সেজন্য সদস্য রাষ্ট্রগুলোর ওতঃপ্রোত সংশ্লিষ্টতায় চুক্তি মেনে চলার স্বার্থেই ওই মামলার পদক্ষেপটি গ্রহণ করা হয়েছে।
অ্যাস্ট্রাজেনেকা অবশ্য আগেই তাদের অক্ষমতার বিষয়টি ইইউ-কে জানুয়ারি মাসেই জানিয়েছে। প্রথম প্রান্তিকে ওই কোম্পানি ১০০ মিলিয়ন ভ্যাকসিন সরবরাহের ক্ষেত্রে মাত্র ৩০ মিলিয়ন ডোজ দিতে পেরেছে। আর সেটাই ইউরোপের দেশগুলোতে টিকাকরণ কর্মকান্ডকে ব্যাহত করেছে।
এই পরিপেক্ষিতে কোম্পানি জানিয়েছে এ বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে বাকি ৭০ মিলিয়ন ডোজ ভ্যাকসিন সরবরাহ সম্পন্ন করবে, যেখানে ইইউ দেশগুলোর সঙ্গে চুক্তিমাফিক আসলে ৩০০ মিলিয়ন ডোজ দেবার কথা ছিল।