এই প্রথম কোনো দেশকে ধার দিচ্ছে বাংলাদেশ
টরন্টো, মে ২৬: এই প্রথম বাংলাদেশ কোনো দেশকে ধার দিচ্ছে । রিজার্ভ থেকে প্রায় ১৭ হাজার কোটি টাকা নিচ্ছে শ্রীলঙ্কা। বৈদেশিক মুদ্রার সংকট মেটাতে বাংলাদেশের শরণাপন্ন হয়েছে শ্রীলঙ্কা।
জানা গেছে, ২ শতাংশ সূদে রিজার্ভ থেকে ২০ কোটি ডলার দেশটিকে ধার দিতে যাচ্ছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক । মুদ্রা বিনিময়ের (কারেন্সি সোয়াপ) আওতায় বন্ধুপ্রতিম দেশটিকে এই সহায়তা দেয়ার ব্যাপারে সম্প্রতি সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালনা বোর্ড। তবে ডেইলি স্টারের প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে ধার দেয়া হবে ৫০ কোটি ডলার।
কয়েক বছর ধরেই শ্রীলঙ্কার অর্থনীতিতে টালমাটাল অবস্থা। জিডিপির আকার ৮ হাজার ৪০০ কোটি ডলার। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৪০০ কোটি ডলারের কাছাকাছি, এটি জিডিপির ৪ দশমিক ৭৬ শতাংশ। এই আর্থিক অবস্থা মোটেও সন্তোষজনক নয় বরং আন্তর্জাতিক রেটিং-এর ক্ষেত্রে ঝুঁকিপূর্ণ। এমন পরিস্থিতি সামাল দিতে কারেন্সি সোয়াপ ডিলের মাধ্যমে অন্য দেশ থেকে বৈদেশিক মুদ্রা আনা হয়।
শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দর রাজাপাকশে গত মার্চে ঢাকা সফরে এসে তার দেশের তারল্য সংকট কাটাতে ঢাকার সহযোগিতা চান।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক সিরাজুল ইসলাম বলেন, শ্রীলঙ্কার সরকারের পক্ষ থেকে বাংলাদেশ সরকারের কাছে বৈদেশিক মুদ্রা চাওয়া হয়েছিলো। এর প্রেক্ষিতে বাংলাদেশ ব্যাংক শ্রীলঙ্কাকে ২০০ থেকে ২৫০ মিলিয়ন ডলার দেওয়ার জন্য নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এখন সরকার চাইলে তিন মাসের জন্য শ্রীলঙ্কাকে এই টাকা দেওয়া হবে।
তিনি বলেন, শ্রীলঙ্কা যে পরিমাণ ডলার নিতে চায় তার সমপরিমাণ শ্রীলঙ্কান রুপি বাংলাদেশ ব্যাংকে জমা রাখতে হবে। সমস্ত ধরনের নিয়ম কানুন শেষে শ্রীলঙ্কাকে এই টাকা দেওয়া হবে। এর জন্য শ্রীলঙ্কার সরকার ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গ্যারান্টি থাকবে।
কিন্তু ডলার যথাসময়ে ফিরে পাওয়া কখনও সমস্যা হতে পারে বলে সতর্ক করেছেন বিশ্লেষকরা। অর্থনীতিবিদ ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, বাংলাদেশ প্রথমবারের মতো এভাবে ডলার দিচ্ছে। এতে বাংলাদেশের সুনাম হবে। তবে কোনো কোনো সময় এধরনের টাকা ফেরত পেতে সমস্যা হয়, তখন একটু অসুবিধা হয়।
তবে কারেন্সি সোয়াপ বা আন্তঃদেশীয় মুদ্রা বিনিময় অনেকটা ‘ব্যাংক টু ব্যাংক লেন্ডিং’ এর মত হওয়ায় ঝুঁকি কম থাকে, বলেছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর আতিউর রহমান। তিনি বলেন, “শ্রীলঙ্কা যদি এই টাকা দিতে না পারে তখন বাংলাদেশ এবং শ্রীলঙ্কার মধ্যে যে বৈদেশিক বাণিজ্য হয়, সেখানে দেনাপাওনা থেকে এই টাকা সমন্বয় করে নেওয়া হবে।”
তিনি আরও বলেন, আমাদের রিজার্ভ এর অধিকাংশ মার্কিন ফেডারেল সিস্টেমে বন্ডে বিনিয়োগ করা থাকে সল্প লাভে। যদি এভাবে নেগলিজেবল এমাউন্ট শর্ট টার্ম লোন হিসাবে অন্য কোথাও খাটানো যায় তবে সেটা বেশ ভালই হবে।