কিংস্টনে ঘৃণাজনিত বিদ্বেষের শিকার দুই মুসলিম নারী
টরন্টো, জুন ১৮: গতকাল অপরাহ্নে অন্টারিও প্রদেশের কিংস্টনে দুই মুসলিম নারী ঘৃণাজনিত বিদ্বেষের শিকার হয়েছেন বলে জানিয়েছে গ্লোবাল নিউজ টেলিভিশন।
ঘটনায় জানা যায়, এতে কিংস্টন এলাকার ডিভিশন স্ট্রিটের কানাডিয়ান টায়ার স্টোরে জেনা বাদাউয়ি ও তার মা অপর এক শ্বেতাঙ্গ নারী ক্রেতা কর্তৃক ঘৃণাজনিত গালাগালের শিকার হয়েছেন। জেনার বর্ণনা মতে, সে এখনও হতবাক এই ভেবে যে, সেখানে কার্বসাইড পরিষেবার লাইনে দাঁড়িয়ে কি করে এক আগন্তক মহিলার আক্রমণের শিকার হয়েছেন। তার ভাষায়, ‘তিনি আমাদের দিকে ফিরে তাকিয়ে গালাগাল দেয়া শুরু করলেন, বললেন আমরা শ্বেতাঙ্গ নই, এটা আমাদের জায়গা নয়।’
ওই মুসলিম মহিলাদ্বয়ের মাথায় হিজাব ছিল এবং তাতে সহজেই তাদের ধর্মবিশ্বাসটি প্রতিভাত। এই ঘটনার সূত্রপাত তখনই ঘটলো, যেখানে অন্টারিও প্রদেশের লন্ডনে দু-সপ্তাহ আগে ঘৃণার শিকার হয়ে একটি পরিবারের চার জনের প্রাণ গেছে এবং একটি শিশু চিরতরে অনাথ হয়েছে।
এই ঘটনা কিংস্টন পুলিশকে জানানো হলে পুলিশ ওই ৪৫ বছরের মহিলার বিরুদ্ধে ঘৃণা সংশ্লিষ্ট অভিযোগ দায়ের করেছে এবং সে মতে তা লিপিবদ্ধ করেছে। এতে গ্লোবাল নিউজকে সার্জেন্ট স্টিভ কুপম্যান বলেছেন, ‘এ ধরণের ঘটনা আমরা গুরুত্ব সহকারে গ্রহণ করে থাকি। তাই এটাকে আমরা ঘৃণাজনিত অপরাধ হিসেবে নিয়েছি। এজন্য আমাদের দপ্তরে একজন নিবেদিতপ্রাণ কর্মকর্তা রয়েছেন, যিনি সমতা, বৈচিত্র্যতা ও একান্নবর্তীতার বিষয়গুলো তদারকি করে থাকেন।’
ইতিমধ্যে কানাডিয়ান টায়ার স্টোরের কর্মচারিরা বিষয়টি জেনে থাকলেও পুলিশি তদন্ত চলছে বিধায় তারা কোনো প্রকার মুখ খোলেননি।
তবে সার্জেন্ট কুপম্যান আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, কেউ এ ধরণের আক্রমণের শিকার হলে তাদের যেন জানানো হয়। তার কথা, ‘এ ধরণের ঘটনা সচরচর আগন্তকের মাঝেই ঘটে থাকে। এটা পারিপার্শ্বিক অবস্থার শিকার মানুষের জন্য নেহায়তই দুর্ভাগ্যজনক, তাই আমরা সেটিকে গুরুত্ব সহকারে গ্রহণ করেছি। এটা কেবল পুলিশের প্রেক্ষাপট বিবেচনায় দেখলেই চলবে না, অপরাধ বিচারের প্রেক্ষাপট থেকেও দেখতে হবে যে, এটা ঘৃণাজনিত অপরাধ; কেননা এটা কোনো কিছু উস্কে দেবার মতো ঘটনা। আর যখন সাজার বিষয়টি আসে, তখন উপযুক্ত ব্যবস্থাটাই, আমার দৃষ্টিতে অতীব গুরুত্বে নেয়া উচিত।’
জেনার এখন বিশ্বাস তাদের এই ঘটনা সচেতনতার পাশাপশি প্রতিরোধ গড়বে। তার ভাষায়, ‘আমার প্রত্যাশা বর্ণবিদ্বেষের বিরুদ্ধে মানুষ রুখে দাঁড়াবে এবং প্রত্যেকের অবস্থান থেকে যতটা সম্ভব সেটাই করা চাই।’
Pic from pixabay.com