‘বিকল ব্রেক’: ইতালিতে ক্যাবল কার দুঘর্টনায় গ্রেফতার ৩
টরন্টো, মে ২৭: ইতালির পিডমন্ট পর্বতের পাদদেশে ‘গনদোলা’ নামে অভিহিত ক্যাবল কার দুঘর্টনায়, যাতে ১৪ জন নিহত হয়েছেন, সেটির সংশ্লিষ্টতায় ৩ ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে বুধবার পুলিশ জানিয়েছে।
এই গ্রেফতারকৃত ব্যক্তিরা ক্যাবল কার ব্যবস্থাপনার সঙ্গে জড়িত, যারা জেনেশুনে ওই দুঘর্টনাটি এড়াতে ব্যর্থ হয়েছে। ফলে জরুরি ব্রেক না কষায় গত রোববার বিকেলে দুঘর্টনা কবলিত ক্যাবল কারটি পাহাড়ের পাদদেশে আছড়ে পড়ে। যাদের গ্রেফতার করা হয়েছে, তারা হচ্ছে- ফিরোভি ডেল মোটারন ক্যবল কার কোম্পানির মালিক লুগি নেরেনি, যাকে ৪৮ ঘন্টার রিমান্ডে ভার্বানিয়া কারাগারের হাজতে আটক রাখা রয়েছে। পাশাপাশি ওই কোম্পানির পরিচালক এনরিকো পেরোচিনি ও প্রকৌশলী গেব্রিয়াল তাদিনি-কেও আটক করা হয়েছে। এদের বিষয়ে তদন্তকারী পুলিশের কমান্ডারের বিশ্বাস ‘তারা নিরাপদ ব্রেকটি অকার্যকর রেখেছিল’ এবং তারা জানতো যে ব্রেকটি বিকল অবস্থায় রয়েছে।
এতে কারাবিনেরি পুলিশের মুখপাত্র জানিয়েছেন, ‘রাষ্ট্রীয় কৌশলীর দপ্তর তাদের গ্রেফতার বা অপসারনের নির্দেশ দিয়েছেন, যাতে তারা দুর্ঘটনা কবলিত তদন্তে কোনো প্রকার হস্তক্ষেপ করতে না পারেন।’
পিডমন্ট পর্বতের নিকটবর্তী নয়নাভিরাম লেক মেগোয়েরের পাশে আছড়ে পড়া ওই মোটারন কোম্পানির ক্যাবল কারটির ১৫ জন যাত্রীর ১৪ জনই ঘটনাস্থলে মারা যায়। শুধুমাত্র উদ্ধারকৃত ৫ বছর বয়সী একটি বালক মরনাপন্ন অবস্থা থেকে বেঁচে গেছে, যদিও ৯ বছর বয়সী অপর এক বালক সেখানে মারা গেছে।
জানা গেছে, গ্রেফতারকৃত ব্যক্তিরা জেনেশুনেই ওই ক্যাবল কারের ব্রেক বিকল অবস্থায় রেখেছিল; ফলশ্রুতিতে যখন চলন্ত কারে যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দেয়, সে সময় দ্রুত উল্টোমুখী উড়োযাত্রা নিয়ন্ত্রণে তা কাজ না করে হঠাৎই তার ছিড়ে ভূমিতে আছড়ে পড়ে।
রাষ্ট্রীয় প্রকৌশলী লিম্পিয়া বোসি সাংবাদিকদের বলেছেন,‘এটি জ্ঞাতসারেই ঘটেছে। পুরোপুরি জ্ঞাতসারে। আর সেটাই মোদ্দা কথা। এটা আকস্মিক কোনো ভ্রান্তি বা ত্রুটি নয়। এটি জেনেশুনেই বিকল রাখা হয়েছিল… জরুরি পরিস্থিতিতে তা তারের লাইনে বিকল হয়ে পড়ে, তেমনটাই কারিগরি দিক থেকে আমাদের জানানো হয়েছে।’
ওই গনদোলাটি মিলান থেকে ৫৫ মাইল উত্তরে লেক মেগোয়েরের তীরবর্তী স্ট্রেসা থেকে ২০ মিনিটের যাত্রাপথ সমুদ্রপৃষ্ট থেকে ৪,৫০০ ফুট উচ্চতার আল্পস পর্বতের মোটারন শৃঙ্গমুখী দ্রুত ধাবমান ছিল। প্রায় গন্তব্যে পৌঁছার ঠিক আগে হঠাৎ করেই তা তার ছিড়ে মাটিতে পড়ে যায়। সে সময় দ্রুত ধাবমান অবস্থায় তা ছিটকে গিয়ে ৬০ ফুট নিচের মাটিতে গিয়ে পড়ে এবং বেশ কয়েক দফা গড়াগড়ি শেষে গাছের সঙ্গে ধাক্কায় থেমে পড়ে। তবু এখনও জানা যায়নি কেন মূল ঝুলন্ত তারটি ছিড়ে গিয়েছিল।
আর একমাত্র বেঁচে যাওয়া ৫ বছর বয়সী ইসরাইলি বালকটিকে সিটি অব টুরিনের রেজিনা মার্গারিটা হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নেয়া হয়েছে, তার পায়ের হাড়ে ফাটলের পাশাপাশি সে শারীরিকভাবে ট্রমাগ্রস্থ। বুধবার ওই হাসপাতালের মুখপাত্র পাওলো বেরা জানিয়েছেন, তার সংকটাবস্থা কাটলেও ধীরে ধীরে ওষুধের প্রায়োগিক প্রভাব থেকে চৈতন্য ফিরে পেয়েছে।