বিশ্বনেতৃবৃন্দের কাছে অনাহারক্লিষ্টতা মোচনে এনজিও সমূহের দাবি
টরন্টো, এপ্রিল ২০: আজ এক খোলা চিঠিতে আড়াইশোর অধিক এনজিওর সমন্বয়ে গঠিত ইন্টারন্যাশনাল কাউন্সিল অব ভলান্টারি এজেন্সিস বিশ্বনেতৃবৃন্দের কাছে এ বছর পৃথিবীব্যাপি কমপক্ষে ৩ কোটি ৪০ লাখ মানুষের বুভুক্ষতা মোচনের জরুরি আহ্বান জানিয়েছে। তারা বলেছে, তাতে সর্বোচ্চ ২৭ কোটি মানুষ নিদারুন অনাহারক্লিষ্টতার পাশাপাশি আরও কয়েক কোটি ‘বিষম আকালের মুখোমুখিতে রয়েছে’।
সেই বক্তব্যের ব্যাখ্যায় তারা বলেছে, করোনা মহামারিসহ যুদ্ধবিগ্রহ, জলবায়ু পরিবর্তন ও বৈষম্যের মতো সামগ্রিক কারণে সারা বিশ্বে খাদ্যের অভাব অনিবার্য। তাতে নিদেনপক্ষে ৩ কোটি ৪০ লাখ মানুষ বুভুক্ষতার শিকার হবে এবং সেখানে আকাল অবিসম্ভাবী, যদি সেখানে আশু কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করা না হয়। ইতিমধ্যে ১ লাখ ৫৫ হাজার মানুষ ইয়েমেন, দক্ষিণ সুদান ও বুরকিনা ফাসোতে নিদারুণ বুভুক্ষতার মাঝে নিপতিত হয়েছে।
বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচী (ডব্লিউএফপি) এবং খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও)-এর ২০২১ সালের দেয়া তথ্যানুসারে তারা আরও বলেছে, জরুরি খাদ্য ও কৃষি সহায়তার পাশাপাশি আকালের ঝুঁকি মোচন, লাখো মানুষের স্বাস্থ্য সেবা, পাণীয় জল সরবরাহ ও অপরাপর মৌলিক চাহিদা পূরণে কমপক্ষে সাড়ে ৫ বিলিয়ন ডলার অপরিহার্য। আর সেটা কোনোভাবেই সম্ভব নয়, যদি পারস্পরিকভাবে এক দেশ অপর দেশের সহযোগিতায় এগিয়ে না আসে।
উপরন্তু তাতে তীর্যক দৃষ্টিপাতের বিষয়টি হচ্ছে, এখনও আকাল মোচনের ক্ষেত্রে কোনো তোড়জোড় নেই। কেননা অর্থ প্রদানই যথেষ্ট নয়। বিদ্যমান সংঘাত মোচনের পাশাপাশি মানবিক সহযোগিতার পথকে সুগম করতে হবে। পরিস্থিতির আশু সুরাহা হওয়া প্রয়োজন, কেননা এখনও তা দৃশ্যমান হয়ে ওঠেনি। আর যদি জরুরি হস্তক্ষেপ করা না হয়, তবে জীবন বিসর্জিত হতে বাধ্য। সেজন্য সকল দেশকে সজাগ দৃষ্টিতে এগিয়ে আসতে হবে। সকল দেশকে বৈষম্যের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর পাশাপাশি সংঘাত মোচনে রাজনৈতিক উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে; আর সেটাই হচ্ছে ক্ষুধা ও সমস্যা মোচনের অবলম্বন। বিদ্যমান সংকট মোচনে রসদ জোগাতে হবে এবং ভবিষ্যতের প্রয়োজনটি বিদূরিত করতে হবে। সেই অপরিহার্যতা মোচনে একত্রিত হয়ে বাস্তবতার মুখোমুখিতে এগিয়ে আসতে হবে।
এ কারণে ইন্টারন্যাশনাল কাউন্সিল অব ভলান্টারি এজেন্সিস বলেছে, সেজন্যই তারা সম্মিলিতভাবে এই আশু সংকট মোচনে ক্ষেত্রে কোনো বিলম্ব ঘটার আগেই আন্তর্জাতিকভাবে সকলের ঐক্যবদ্ধ প্রয়াস কামনা করেছে। সে বিষয়ে তিনটি উপায়ে তারা অগ্রগতি কামনা করেছে। প্রথমত, বর্তমান ও ভবিষ্যতের জন্য দাতা দেশ সমূহের জরুরি অংশগ্রহণ কামনা করেছে। দ্বিতীয়ত, সমাজে স্থানীয়, জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে এনজিও সমূহের অংশগ্রহণে সমন্বয় সাধন চেয়েছে। তৃতীয়ত, বৈশ্বিকভাবে জাতীয় পর্যায়ে খাদ্য ও মানবিক সংকট বিষয়ে জনসচেতনতা গড়ে তোলার তাগিদ দিয়েছে।