৬৫ ঊর্ধ্ব বয়সীদের জন্য অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা অনুমোদন করলো কানাডা মোহাম্মদ আলী বোখারী, সিএনএমজি নিউজ
টরন্টো, ১৬ মার্চ – আজ সকালে অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকার ক্ষেত্রে দ্য ন্যাশনাল অ্যাডভাইজরি কমিটি অন ইম্যুনাইজেশন (এনএসিআই) তাদের আগের দেয়া সুপারিশ অর্থাৎ ৬৫ বছর নিচের নিয়মটি পরিবর্তন করে ৬৫ বছর উপরের বয়সীদের জন্য অনুমোদন করেছে। সেই ঘোষণা সংবাদ সম্মেলনে স্বয়ং স্বাস্থ্য মন্ত্রী প্যাটি হাজডু এবং উদ্ভাবণ, বিজ্ঞান ও শিল্প মন্ত্রী ফ্রাসোয়া-ফিলিপ শ্যাম্পেইনের উপস্থিতিতে জানিয়েছেন কানাডার প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. টেরেজা ট্যাম ও উপ স্বাস্থ্য প্রধান ডা. হাওয়ার্ড ন্যূজু।
এর আগে এ মাসের শুরুতে এনএসিআই-এর সুপারিশের পরিপ্রেক্ষিতে নিয়ন্ত্রক প্রতিষ্ঠান, হেলথ্ কানাডা অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা ৬৫ বছরের কম বয়সীদের জন্য তার অনুমোদন দেয়।
সে সময় এনএসিআই অ্যাস্ট্রাজেনেকার ট্রায়াল উপাত্তটি বিবেচনায় নেয়। কিন্তু ৭ ডিসেম্বর পরবর্তী বিভিন্ন দেশে অতি বয়সীদের ক্ষেত্রে এই টিকার কার্যক্ষমতা তারা বিবেচনায় নেয়নি।
এতে এনএসিআই’র চেয়ারম্যান ডা. ক্যারোলিন কুয়াচ-থান বলেন, তার কমিটি ওই টিকার বাস্তবিক কার্যক্ষমতার ভিত্তিতে ওই সুপারিশে পরিবর্তন এনেছে, বিশেষ করে যুক্তরাজ্যে ৬৫ ঊর্ধ্ব বয়সীদের ক্ষেত্রে ব্যবহৃত ফলাফল বিবেচনায়। সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘লোকে যদি মনে করে আমরা দোটানায়, তবে সেটা ঘটছে উপাত্ত প্রমাণের ভিত্তিতে।’
অপরদিকে, ডালহৌসি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিশু ও বৈশ্বিক টিকা অনিহা বিশেষজ্ঞ ডা. ননি ম্যাকডোনাল্ড বলেন, ‘কানাডিয়ানদের বুঝতে হবে বিজ্ঞান পরিবর্তনশীল। মূল দিকটি হচ্ছে, বিজ্ঞানের পরিবর্তন ধারায় সকলকে যথাযথ পরামর্শ দেয়া। এখানে এখন দেখা যাচ্ছে বাস্তবিক অর্থে অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা ৬৫ ঊর্ধ্ব বয়সীদের জন্য হাসপাতালে যাওয়া ও করোনার কারণে মৃত্যুহার হ্রাস করেছে। আমরা জানি, এই পরিবর্তনশীল পরামর্শ দুশ্চিন্তার কাণ, তবু আমাদের বিজ্ঞানের পরিবর্তনটি জানানো দরকার এবং সেটা ভালো দিক।’
তবে ডা. ক্যারোলিন কুয়াচ-থানের মতে, ‘অস্পষ্টতা দূর করতে এনএসিআই ও হেলথ্ কানাডার মধ্যে আরও ভালো যোগাযোগ হওয়া চাই। যথাযথ তথ্য প্রদানে তার বিকল্প নেই। আর সেটা পাবলিক হেলথ্ এজেন্সি অব কানাডা উপলব্ধি করতে পেরেছে এবং তার প্রয়োগ ঘটেছে। এক্ষেত্রে মহামারির আকারটি সবার আগে বিবেচ্য।’
যদিও এনএসিআই জীবাণু সংক্রমণ বিবেচনায় অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা সকল বয়সের জন্য অনুমোদনের সুপারিশ করেছে, তবু ‘এমআরএনএ’ টিকা হিসেবে ফাইজার বায়োএনটেক ও মর্ডানার টিকাটি অগ্রাধিকার ভিত্তিতে অতি বয়স্কদের জন্য প্রযোজ্য থাকছে। আর সেটা এনএসিআই কমিটি তাদের বিবৃতিতে উল্লেখ করেছে।
এতে অন্টারিওর কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন টাস্ক ফোর্সের সদস্য ও সংক্রমণ রোগ বিশেষজ্ঞ ডা. আইজ্যাক বোগোজের মতে, এই সুপারিশ দ্বিধা ও অনিহার সঞ্চার ঘটাবে। তিনি সুস্পষ্ট করে বলেন, ‘এই বিবৃতির অর্থ দাঁড়াচ্ছে ৬৫ ঊর্ধ্ব বয়সীদের পছন্দের বিবেচনায় এমআরএনএ টিকা নেয়াটা শ্রেয় এবং অপরিপক্ক সময় বিবেচনায় তুলনামূলক বিশ্লেষণটি যথোপযুক্ত নয়।’
তার কথা, ‘এতে জরুরি জনস্বাস্থ্যের প্রেক্ষাপটে সকল জোগানসমৃদ্ধ টিকাই বিশেষত সংক্রমণ রোধে সক্ষম… সেজন্য আমরা চাই না কেউ জীবনরক্ষাকারী অন্য কোনো টিকার অপেক্ষায় থাকুক, তাতে উদ্বেগ দেখা বাড়তে পারে। আর তাতে এখনই শোনা যাচ্ছে, লোকে টিকা এ’র জন্য বি পাচ্ছে।’