অন্টারিও প্রদেশে তৃতীয় ঢেউয়ের মাঝে ২৮ দিনের লকডাউন ঘোষিত মোহাম্মদ আলী বোখারী, সিএনএমএনজি নিউজ
টরন্টো, এপ্রিল ১: করোনার তৃতীয় ঢেউয়ের শুরুতে ভেরিয়্যান্টের প্রকোপে হাসপাতালে ভর্তি এবং সংক্রমণ ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পাওয়ায় প্রিমিয়ার ডাঘ ফোর্ড ৩ এপ্রিল শনিবার ১২:০১ মিনিট থেকে সারা অন্টারিও প্রদেশে লকডাউন ঘোষণা করেছেন আজ। এই লকডাউন ঘোষিত হওয়ায় চলমান মহামারীতে মানুষ যাতে উন্মুক্ত অঙ্গণে বিক্ষিপ্তভাবে ঘোরাফেরা না করে এবং সমস্যাসংকুল পরিস্থিতিতে সতর্ক থাকে সে ব্যবস্থাটি নেয়া হয়েছে। যদিও সংক্রমণ রোধে টিকাদান কার্যক্রমটি অব্যাহত রয়েছে। সেজন্য অধিবাসীদের অন্যের সঙ্গে সামাজিক সংযোগ এই লকডাউনে সীমিত আকারে বজায় রাখার উপর গুরুত্বারোপ করা হয়েছে।
যদিও প্রাদেশিক এই লকডাউনের কারণে নানা কার্যক্রমের উপর বিরূপ প্রভাব পড়েছে। তাতে স্বাভাবিকভাবে সকল প্রকার বিনোদন কার্যক্রমগুলো স্থগিত ঘোষণা করা হয়েছে। এতে সিটি ও পৌর কর্মীরা বিধি-নিষেধ আরোপের ক্ষেত্রে কমিউনিটি গ্রুপের সঙ্গে একাত্ম হয়ে কাজ করতে বদ্ধপরিকর।
ইতিমধ্যে সিটি ও পৌর কর্তৃপক্ষ দায়িত্বশীল অবস্থান থেকে কমিউনিটির উপযোগিতামাফিক মহামারীতে গৃহীত বিধি-নিষেধ বজায় রেখেছেন। একই সঙ্গে তারা আর্থিক দিক বিবেচনায় পরিষেবা অব্যাহত রাখছেন, বিশেষত কমিউনিটি সেন্টার, লাইব্রেরি ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্রগুলোর ক্ষেত্রে, যে গুলোর উপর স্থাবর সম্পত্তির কর প্রদানের আর্থিক চাপটি রয়েছে।
গ্রোসারি ও অপরিহার্য পরিষেবার ক্ষেত্রে ৫০ শতাংশ ধারণ ক্ষমতায় এবং ক্ষুদ্র ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও অপ্রয়োজনীয় পরিষেবার খুচরা ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলো ২৫ শতাংশ ধারণ ক্ষমতায় খোলা থাকছে। ব্যক্তিগত পরিষেবা ও শরীরচর্চা কেন্দ্রগুলো বন্ধ থাকবে। রেস্তোরাগুলোতে সেবা ও ডেলিভারি সীমিতকরণ করা হয়েছে। বিবাহ অনুষ্ঠান, শবযাত্রা ও ধর্মীয় অনুষ্ঠানের ক্ষেত্রে অভ্যন্তরীণভাবে ১৫ শতাংশ ধারণ ক্ষমতায় কার্যক্রম পরিচালনা এবং বাইরে দুই মিটারের সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার ক্ষেত্রে অনুরূপ নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। আর সেক্ষেত্রে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে ৫ জনের বেশি অভ্যন্তরীণ অভ্যর্থনা এবং বাইরের বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত রাখা হয়নি।
এটা অতীব জরুরি যে অধিবাসীরা যতটা সম্ভব স্বগৃহে অবস্থান করবেন এবং বাসাবাড়ীতে বাইরের লোকজন নিয়ে কোনো প্রকার সামাজিক অনুষ্ঠান আয়োজন থেকে বিরত থাকবেন। যদিও সময়টা ধর্মীয় গাম্ভীর্য, অর্থাৎ পাসওভার, ইস্টার ও রমজান সংশ্লিষ্ট, তাতে সংশ্লিষ্টরা যেন তাদের নিজস্ব পরিসরে আবদ্ধ থাকেন এবং জনস্বাস্থ্য বিধি মেনে চলেন।
এই পরিস্থিতিতে ইতিমধ্যে নিবিড় পরিচর্যা বা আইসিইউতে সম্পৃক্ত ১৫৩ জন চিকিৎসক বৃহস্পতিবার সরকারের কাছে একটি খোলা চিঠি দিয়ে কঠোর জনস্বাস্থ্য বিধি মেনে চলার আহবান জানিয়েছেন। সেটা প্রাদেশিক লকডাউন ঘোষণার আগেই জনসমক্ষে তুলে ধরা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, চিকিৎসকরা তুলনামূলক তরুণ রোগীদের সংক্রমিত হতে দেখছেন, এমনকী স্কুলগামী কিশোর-কিশোরীর বাবা-মাকে দেখছেন, যেখানে ভেরিয়্যান্টের কারণে পুরো পরিবারই আক্রান্ত হয়েছে।